Subject Review
Management Information Systems (MIS)
প্রথমেই একটু আলোচনা করে নেওয়া দরকার যে BBA জিনিসটা কি? তোমরা যারা গ ইউনিটে চান্স পেয়েছো, আগামী ৪ বছর তোমরা যে কোর্সটি করবে তার নাম BBA বা Bachelor of Business Administration . BBA তে তোমার মোট সেমিস্টার হবে ৮টি। প্রতি সেমিস্টারের দৈর্ঘ্য ৪-৬ মাস(ডিপার্টমেন্ট ভেদে)। ব্যাপারটা আরেকটু সহজ করে বুঝাই। স্কুলে তোমরা ১০ টি ক্লাস পাশ করার পরে SSC দিতে পেরেছো, বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ টি সেমিস্টার পাশ করে তোমরা সার্টিফিকেট অর্জন করবে; পার্থ্যক্য হলো যে স্কুলে প্রতি ক্লাস পাশ করতে লেগেছে ১ বছর, এখন লাগবে ৪-৬ মাস।
এখন এই ৮ টি সেমিস্টারের প্রতিটিতে ৫ টি করে কোর্স থাকবে। ৮*৫=৪০টি কোর্স শেষ করে তোমরা সার্টিফিকেট অর্জন করবে। একটা কমন মিথ ভাঙ্গি, আমাদের অনেকেরই একটা বিশাল ভুল ধারণা হলো যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র পিউর সাবজেক্ট পড়ানো হয় (মানে আমি যদি ফিন্যান্সে ভর্তি হই তাহলে আমাকে শুধু ফিন্যান্স নিয়েই পড়তে হবে, আর কিছু পড়া লাগবে না); এটা ভুল, BBA তে তোমরা যে ৪০ টি কোর্স করবে তার মধ্যে ৩২ টি কোর্স সব ডিপার্টমেন্টে সেম, বাকি ৮ টা কোর্স ডিপার্টমেন্ট ভেদে আলাদা(তুমি ফিন্যান্সে ভর্তি হলেও তোমাকে একাউন্টটিং ম্যানেজমেন্ট সবই পড়তে হবে)। এটাকেই বলে তোমার 'মেজর', আগামী কয়েকদিন তোমরা সাবজেক্ট চয়েজ করবে, তাই এই মেজর গুলো খেয়াল করে সাবজেক্ট বাছাই করো (মনে কর তুমি একাউন্টটিং ডিপার্টমেন্ট থেকে পাশ করলে, তোমার বন্ধু ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্ট থেকে পাশ করলো। তাহলে তোমার মেজর একাউন্টটিং, তোমার বন্ধুর মেজর ফিন্যান্স। তোমার বন্ধু ফিন্যান্সের উপর ৮ টি কোর্স বেশি করছে যা তুমি কর নাই, আবার তুমি একাউন্টটিং এর উপর ৮ টি কোর্স বেশি করছো যা তোমার বন্ধু করে নাই। কিন্তু, বাকি ৩২টি কোর্স তোমাদের সেম)
ভর্তি যুদ্ধে উত্তীর্ণ হওয়ার চেয়েও কঠিন সংগ্রাম হল সাবজেক্ট চয়েজ process. দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পরেও আপনি যদি নিজের জন্য সেরা বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে ভুল করেন তাহলে চার বছর পর আপনার হাতে শুধুই সার্টিফিকেট নামক একটি কাগজ থাকবে কোন প্রাপ্তি থাকবে না !
সব ধরনের জটিলতাকে একপাশে রেখে একদম clear করে আসুন আমরা Management information systems বা MIS সম্পর্কে ছোট্ট একটি ধারণা নিয়ে নেই :
#Management_information_systems কি ?
একদম সহজ ভাবে বলতে গেলে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম হচ্ছে একটা সেতু যেটা ব্যবসা এবং প্রযুক্তিকে কানেক্ট করবে।
অর্থাৎ আপনি যদি শুধুমাত্র technology নিয়ে পড়েন তাহলে আপনি জানবেন না ব্যবসায়ে কত ধরনের সম্ভাবনা থাকে। অপরদিকে আপনি যদি শুধুমাত্র ব্যবসা নিয়ে পড়েন তাহলে আপনি জানবেন না প্রযুক্তি দিয়ে কী কী অসাধ্য সাধন সম্ভব! কিন্তু যখন আপনি এমআইএস নিয়ে পড়বেন তখন আপনি জানবেন কিভাবেব্যবসার সাথে প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে সেই ব্যবসাটিকে আধুনিকায়ন করা যায়!
অর্থাৎ এই subject এর মূল বিষয় গুলোই হলো data structure and algorithm, programming , statistics, Math etc etc.
এটিকে BBA+CSE বললেও মন্দ হবেনা!
#সিজিপিএ কেমন উঠে?
আপনি যদি আপনার সাবজেক্টটাকে কে ভালবাসতে পারেন তাহলে সাবজেক্ট এর মূল যে বিষয়গুলো , সেগুলো আপনি খুব সহজে আয়ত্ত করতে পারবেন।এবং মূল বিষয় টাকে যদি আপনি আয়ত্ত করতে পারেন আপনার জন্য সিজিপিএ তোলা সবথেকে easy অর্থাৎ এক কথায় topic বুঝলে এমআইএস সাবজেক্টে ভালো CGPA তোলা তূলনা মূলক সহজ।
#চার বছর পর MIS আমাকে কি কি বিষয়ে দক্ষ করবে?
Data structure and algorithm
Statistics
Programming
Communication fluency
Ability to make connections between business and technology etc
#দেশে ও দেশের বাইরে চাকরির বাজার কেমন?
এটাই মূলত আমাদের core question থাকে সবার।আপনি নিজে একটু চিন্তা করেন পৃথিবীর এমন কোন প্রতিষ্ঠান কি আছে যেখানে Management লাগেনা ? আমরা সবাই জানি "ব্যবস্থাপনা সার্বজনীন!" একই সাথে এমন কোন প্রতিষ্ঠান কি আছে যেখানে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় না ? সুতরাং সব ধরনের প্রতিষ্ঠানেরই "প্রযুক্তি' এবং "ব্যবস্থাপনাকে" সংযোগকারী ব্যক্তি দরকার হবে। তাই অন্যান্য সব সাবজেক্ট এর চেয়ে এমআইএস নিয়ে যারা পড়ে তাদের ক্ষেত্রে domestic এবং international job field এ opportunities অনেক বেশি থাকে (Data architecture, Data analyst, business analyst, business adviser etc) ।কারণ তারা একই সাথে ব্যবসায় পরিচালনা এবং প্রযুক্তি উভয় ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করে।
# " আমি চাকরি করব না - আমি ব্যবসা করবো " সে ক্ষেত্রে আমি কেন MIS নিব?
আচ্ছা আপনি নিজে একটু চিন্তা করুন আপনি যখন একটা ব্যবসা স্থাপন করবেন সে ক্ষেত্রে আপনি কি আপনার ব্যবসায় কোন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন না? সুতরাং আপনার ব্যবসাতেও কিন্তু আপনার MIS ডিপার্টমেন্ট থেকে লোকজন নিয়োগ করতে হবে!
তাই আপনি নিজে যদি এই সাবজেক্টটা নিয়ে পড়েন তাহলে আপনার ব্যবসা আরো অনেক তাড়াতাড়ি সাফল্য লাভ করবে কারণ আপনি নিজেই সমস্ত কাজ তদারকি করতে পারবেন perfectly!
#আমি সরকারী চাকুরি করতে চাই, MIS নিয়ে আমার কি লাভ হবে?
সত্যি কথা বলতে আদতে কোন লাভ হবে না; এই সাবজেক্ট কেন, কোন সাবজেক্ট নিয়ে কোন লাভ হবে না। তবে যদি সরকারি চাকরি নিয়ে আগ্রহী থাকো তাহলে এটা হয়তো জানো যে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক বড় মাপের বিনিয়োগ করছে এবং এই খাতে দক্ষ জনবলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সরকারিখাতে ও প্রযুক্তিবিষয়ক অনেক কাজ করা হয় এবং অনেক কর্মসংস্থান রয়েছে, MIS এর অভিজ্ঞতা তোমাকে সে সব জায়গাতে ভালো করবার সুযোগ এনে দেবে।
#Management এবং Management information systems এর মধ্যে পার্থক্য কী?
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস হচ্ছে ম্যানেজমেন্ট বিষয়েরই আপডেট বা উন্নত সংস্করণ। সোজা বাংলায় বলতে গেলে ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টে থিউরিটিক্যাল জিনিসপত্র অনেক বেশি অপরদিকে এমআইএস এ টেকনোলজিক্যাল বিষয়গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আরেকটা মিথ ভাঙ্গি, সেটা হলো অনেকেই বলবে যে ম্যানেজার হওয়ার জন্য ম্যানেজমেন্ট পড়তে হবে, এই কথাটা ভুল, BBA এর যেকোন সাবজেক্টই তোমার ম্যানেজারিয়াল স্কিল বাড়ানোর জন্য কাজ করবে। আলাদাভাবে MIS তোমাকে ইনফরমেশন টেকনোলজিতে স্পেশালাইজড করবে, অন্যদিকে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ তোমাকে Resource Management or HRM এর উপর স্পেশালাইজড করবে। একটা পুরোদমে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক পড়াশুনা, অন্যটা অনেক থিউরিটিকাল পড়াশুনা
#ঢাকা ইউনিভার্সিটির ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের স্বতন্ত্রতা কী?
অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই সিনিয়র-জুনিয়র বন্ডিং!
গ্রাজুয়েশন শেষে আমরা কিছু নিয়ে বের হয়ে যেতে পারি বা না পারি আমার firm belief আমরা amazing একটা networking এর সুযোগ নিয়ে বের হবো... যেটা আমাদের জীবনের চাকরির ক্ষেত্রে বলি or personal sectors- সবসময়ই সবার আগে দরকার হবে। এছাড়া প্রতিবছর আমাদের "MIS picnic" আয়োজন করা হয় যেখানে এমআইএস এর প্রথম ব্যাচে থেকে একদম সর্বশেষ ব্যাচ পর্যন্ত সকলেই উপস্থিত থাকে মোটামুটি।
যাদের আইসিটি পড়তে ভালো লাগে না তারা কেন এমআইএস নিবে?
আপনি যখন চাকরির ক্ষেত্রগুলোতে যাবেন তখন board of directors/ core organizers সবার আগে দেখবে আপনার প্রযুক্তিগত কোন দক্ষতা আছে কিনা । তখন কিন্তু আপনার প্রযুক্তির উপরে দখলদারিত্ব নিয়ে যেতেই হবে - আপনার আইসিটি ভালো লাগুক বা না লাগুক । সে ক্ষেত্রে আপনি যদি চার বছরের একটা অভিজ্ঞতা নিয়ে যান খুব স্বাভাবিক ভাবে অন্যান্য candidates দের থেকে আপনার প্রাধান্য অনেক বেশি থাকবে।
#MIS এর সবই কি ভালো? কোনো খারাপ গুন নেই?
হ্যাঁ অবশ্যই আছে , ঢাকা ইউনিভার্সিটির MIS ডিপার্টমেন্ট একটু ধীর গতির (1/2 month lengthy than other departments) এটা অনেকটা ইচ্ছাকৃতভাবেই করা, কারণ যাতে শিক্ষার্থীরা আইটি বিষয়গুলোর সাথে এডজাস্ট হতে পারে। পরের সেমিস্টার থেকেই সব আবার এডজাস্ট করা হয়
#কাদের MIS নিয়ে পড়া উচিৎ?
যাদের আইটি নিয়ে আগ্রহ বেশি এবং টেকনোলজিকাল বিষয়গুলো ভালো বুঝে। বিশেষত প্রগ্রামিং, ওয়েব ডিজাইন বা ডাটা এনাইলাইসিস এর মত বিষয়গুলোতে যাদের আগ্রহ আছে তাদের জন্য প্রথম পছন্দই হতে পারে MIS
#কাদের MIS নিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে?
যারা আইসিটি বা টেকনোলজিকাল জিনিসপত্র ব্যবহার করতে চাও না বা ভয় পাও। না পারাটা কোন দোষের না, শিখার জন্যই তুমি ডিপার্টমেন্টে আসবে(এবং সিনিয়র ও ফ্যাকাল্টিরা তোমাদের এগুলো শিখিয়েও দিবেন), তবে যদি তোমার আগ্রহ না থাকে তাহলে শিখা সম্ভব না। তাই এখানে আসার আগে এই বিষয়টা একটু বিবেচনা করে নিও।
#গতবার কত থেকে কত পজিশনে চান্স পেয়েছে?
প্রথম যে ছিলো তার পজিশন ২৭৩, শেষ জনের পজিশন ৮৯৭ (এবার সিট কম তাই এবারের হিসাব অন্যরকম হবে)
#ইমিডিয়েট সিনিয়ররা কেমন?
বর্তমান ব্যাচ 16 তম ব্যাচ, (আর তোমরা যারা নবীন আসবে তারা হবে 17 তম ব্যাচ)। 16 ব্যাচের অনেক কৃতিত্ব হয়েছে মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই, এ নিয়ে কিছু ছবি ও ভিডিও আমরা এ পোস্টে এড করে দিয়েছি, প্রত্যেক ছবির নিচে ক্যাপশনে সে ছবি সম্পর্কে কিছু কথাবার্তা বলা আছে।
#ডিপার্টমেন্টে চিল করা যায়?
ডিপার্টমেন্টে ফাঁকিবাজি করা খুব একটা সম্ভব না তবে এখানে অনেক ফ্রি সময় পাবে। প্রথম সেমিস্টারে আমাদের সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস হতো আর বাকি চার দিন আমরা ঘুরে বেড়াতাম কিংবা ছুটি কাটাতাম। এই ডিপার্টমেন্টে একটা ভালো গুণ হচ্ছে mid-term পরীক্ষার সময় আলাদা ভাবে একটা mid-week রাখা হয়। অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের ক্লাস চলাকালীন সময়ে এই পরীক্ষাগুলো নিয়ে নেওয়া হয় ফলে ক্লাসের প্রেশার এবং পরীক্ষার প্রেশারে অনেকেরই রেজাল্ট খারাপ হয়ে যায়। আমাদের ডিপার্টমেন্ট প্রত্যেকটি পরীক্ষার আগে বেশ ভাল রকমের সময় দেয় প্রিপারেশন নেওয়ার জন্য এবং যেদিন পরীক্ষা হয় সেদিন অন্য কোন ক্লাস থাকে না। আমরা গত ছয় মাসে অনেক মজা করেছি এবং অনেক ঘুরাঘুরি হয়েছে, আশা করি তোমরা ও এখানে বেশ আনন্দের সাথে কাটাতে পারবে।
© Shohidul Islam Shishir