♦সাবজেক্ট রিভিউঃ রসায়ন
রসায়ন যদি তোমার প্রথম পছন্দ হয়, তাহলে নিজেকে তৈরি করে নাও মানসিক ভাবে। কারণ, রসায়নে পড়তে হয় বিভিন্ন রকমের পদার্থ, তাদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম, তারা কী ভাবে একে অপরের সঙ্গে মিশে এক বা একাধিক নতুন পদার্থ তৈরি করে, যদি নতুন কোনও পদার্থ তারি করে তা হলে সেই পদার্থটির ধর্ম কী ইত্যাদি।
.
পাশাপাশি একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া কী ভাবে সংঘটিত হবে, পর্যায় সারণিতে কোন মৌলের অবস্থান কোথায়, তাদের ধর্ম, মৌলগুলির আন্তঃসম্পর্ক রসায়ন শাস্ত্রের এই প্রথম ধাপগুলি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তোমার থাকাটা বাঞ্ছনীয়।
.
অনেকের কাছেই বিষয়টি খুব বোরিং মনে হলেও ভেবে দেখ, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা যা কিছু ব্যবহার করি, তা সবই তো রাসায়নিক। সে টুথপেস্ট হোক, খাবারদাবার হোক বা কোনও জীবনদায়ী ওষুধ। এই সব জিনিসের জন্ম হয় রসায়নাগারে, উৎপাদন হয় রাসায়নিক শিল্পকারখানায়। পরিবেশের ক্ষতি না করে মানুষের কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক জিনিসপত্র তৈরি করা, সেই জিনিস তৈরির ঠিক পদ্ধতি আবিষ্কার করা, এক জন দক্ষ রসায়নবিদ ছাড়া তো এ কাজ আর কেউ করতে পারে না।
.
রসায়ন বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় এর পিওর সায়েন্স (A Unit) ফ্যাকাল্টির একটি সাবজেক্ট দেশের প্রায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারী কলেজ সমূহে স্নাতক পর্যায়ের রসায়ন পড়ানো হয়।
.
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রসায়ন শাস্ত্র এখন আর শুধু তার প্রথাগত শাখার মধ্যেই সীমিত নেই। বরং ছড়িয়ে পড়েছে
★বায়োকেমিস্ট্রি,
★ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি ,
★অর্গ্যানিক কেমিস্ট্রি ,
★ইনঅর্গ্যানিক কেমিস্ট্রির মতো নানাদিকেই।
.
কেউ স্নাতক স্তরে রসায়ন নিয়ে পড়ে ভবিষ্যতে গবেষণার কথা ভাবে তা হলে তার কাছেও হরেক বিকল্প রয়েছে। যেমন এখন রসায়নের ছাত্রছাত্রীরা স্পেশালাইজেশন করতে পারে
★বায়োকেমিস্ট্রি,
★সিনথেটিক বা ইনঅর্গ্যানিক কেমিস্ট্রি,
★বায়োঅর্গ্যানিক এবং
★বায়োইনঅর্গ্যানিক কেমিস্ট্রি,
★বায়োমলিকিউলস এবং বায়ো মিমিকস,
★ড্রাগ ডিজাইন এবং ড্রাগ ডেলিভারি সিস্টেমস, ★অর্গ্যানোমেটালিক এবং সুপ্রামলিকিউলার কেমিস্ট্রি,
★কম্পিউটেশনাল এবং থিয়োরেটিক্যাল কেমিস্ট্রি,
★সলিড স্টেট এবং সফ্ট কনডেন্সড ম্যাটার,
★কোলয়েডস এবং ইন্টারফেসেজ,
★রাবার এবং পলিমারস,
★মেটাল,
★সেরামিক এবং কম্পোজিটস,
★ক্যাটালিসিস,
★ফোটোকেমিস্ট্রি এবং লিথোগ্রাফি,
★ন্যানোটেকনোলজি ইত্যাদিতে।
.
এ ছাড়া
★ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভিন্ন শাখা,
★মেডিসিন,
★আর্থ সায়েন্স এবং এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স-এর মতো বিষয়ে ইন্টারডিসিপ্লিনারি গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে ছেলেমেয়েদের কাছে।
.
স্নাতকের চার বছরে তোমাকে যে ভূবনে বিচরণ করতে হবে সেগুলো একবার দেখে নাও
.
★Surface Chemistry and Adsorption phenomena.
★Reaction Kinetics.
★Photochemistry.
★Synthetic Organic Chemistry.
★Organic Reaction Mechanism.
★Natural Products and Carbohydrates.
★Organometallic Chemistry.
★Jute and Cellulose.
★Medicinal Chemistry.
★Pesticide residues.
★Inorganic Polymers including ★Phosphorus-Nitrogen, Sulphur-Nitrogen
and Silicon Compounds.
★X-ray crystallographic studies and solid state Chemistry.
★Co-ordination Chemistry.
Catalysis.
★Analytical Chemistry
★Development of Analytical techniques.
★Analysis of Water, Soil and bio-logical samples.
★Study of metal-drug interactions
★Environmental Chemistry
★Monitoring of soil, water and air pollution.
★Development of pollutants remedial methods from water.
★Characterization of different organic pollutants present in water and soil.
★Electrochemistry and Electroanalytical Methods.
★Polymer Chemistry.
★Bioinorganic Chemistry.
এটা মোটামুটি ধারনা।বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি ও তোমাদের ডিপার্টমেন্ট তোমাদের জন্য সাজিয়ে গুছিয়ে সিলেবাস তৈরি করবেন।
.
কেমিস্ট্রির জব সেক্টর:-
.
বিদেশে স্কলারশিপ এর অপার সুযোগ সহ বি.সি.এস এর মাধ্যমে সরকারী কলেজগুলোতে শিক্ষকতা বা অধ্যাপনার, ব্যাংক জব এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সংস্থাতেও রসায়নের ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। যেমন রাসায়নিক বা আনুষঙ্গিক শিল্পক্ষেত্রে রয়াসনের ছেলেমেয়েরা কাজ পেতে পারে
★বিসিআইসি,এর মত সরকারী প্রতিষ্ঠান সহ প্রচুর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ দেশে অাছে।
★ফার্টিলাইজার এন্ড ইনসেক্টিসাইড
★ফুড এন্ড নিউট্রিশন
★ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রীজ
★রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট,
★ম্যানুফ্যাকচারিং,
★কোয়ালিটি কন্ট্রোল,
★সেলস ও মার্কেটিং,
★ইন্টালেকচুয়্যাল প্রপার্টি রাইটস ইত্যাদিতে। এ ছাড়াও
★এনার্জি এবং এনভায়রনমেন্ট সেক্টর,
★অ্যানালিটিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস সেক্টর,
★মেটাল এবং অ্যালয় সেক্টর এমনকী
★আই টি সেক্টরেও কাজ করা যায় রসায়ন পড়ে ।
★ ফার্টিলাইজার এন্ড ইনসেক্টিসাইড
★ফুড এন্ড নিউট্রিশন
★ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রীজ
★রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট,
★ম্যানুফ্যাকচারিং,
★কোয়ালিটি কন্ট্রোল,
★সেলস ও মার্কেটিং,
★ইন্টালেকচুয়্যাল প্রপার্টি রাইটস
★এনার্জি এবং এনভায়রনমেন্ট সেক্টর,
★অ্যানালিটিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস সেক্টর,
★মেটাল এবং অ্যালয় সেক্টর
★ঔষধ শিল্প
★গার্মেন্টস শিল্প
★ভোজ্য তেল,
★জুতা,
★সাবান,
★থার্ড পার্টি ল্যাব বা ইন্সপেকশন ল্যাব,
★সুতা,
★টোবাক্কো,
★ইলেকট্রনিক্স পণ্য,
★লুব্রিকেটিং তেল শিল্প,
★কাগজ, শিল্প
★পেইন্টস শিল্প,
★কোমল পানীয়,
★সার কারখানা
★পেপার মিল
★সুগার মিল
★গ্লাস ও সিরামিক শিল্প
★পেইন্টস কারখানা
★ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানি
★টেক্সটাইল কোম্পানি
★কসমেটিকস কোম্পানি
★পেট্রোলিয়াম শিল্প
★পারমাণবিক প্ল্যান্ট
★ সিমেন্ট কারখানা
★ তেল উত্তোলন ও পরিশোধন
★ট্যানারি শিল্প
★ বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ
★ কাচ,
★খাদ্য দ্রব্য এধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানে জব করা যায়। এমন কি
★আই টি সেক্টরেও কাজ করা যায়
এই সকল সেক্টরে তুমি একজন Chemist officer হিসেবে কাজ করতে পারো।
.....
তুমি সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত যা কিছু ব্যবহার করো সব ক্ষেত্রেই রসায়নের অবদান অনস্বীকার্য এবং সব ক্ষেত্রে কেমিস্ট লাগবেই।
...
মনে রাখবে রসায়নই একমাত্র ধ্রুপদী
বিজ্ঞান যার প্রকৌশলীদের মত
শিল্প প্রতিষ্টানে ব্যাপক জব রয়েছে।
এবার কেমিস্ট হিসাবে জব করার জন্য
যে সব বিষয় জবে খুব বেশী দরকার তা
হল
Spectroscopy ও Product formulation. ....
এ দুটো বিষয়ে যদি তোমার পারদর্শীতা
থাকে, তবে প্রাইভেট জব কোন ব্যাপার
না।
..
.
★ শিক্ষকতাঃ
University, College, School
এ রসায়নে শিক্ষকতা করার সুযোগ ।
.
★ বিদেশে উচ্চ শিক্ষা:
....
তোমার যদি
খুব উন্নত জীবন যাপন করার আর গবেষক
হওয়ার ইচ্ছা থাকে তবে বিদেশে
রিসার্চ মাস্টার্স বা PhD
করতে পারো।
ভাবছো সিজিপিএ কম
বা কোন দেশ রসায়নের জন্য উপযোগী
যেখানে PhD করা যাবে তবে আমি
এক শব্দে বলব দেশটার নাম USA.
কারন - একমাত্র USA তে সবচেয়ে বেশী
ফান্ডিং দেওয়া হয় রসায়নে আর
এরপরে মেকানিক্যাল ও
পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলে।
একমাত্র USA তে অর্ধেক ইউনিভার্সিটি CGPA থেকে GRE Score কে বেশী গুরুত্ব দেয়।
তোমার সিজিপিএ যদি ৩.২০ ও হয় আর GRE Score হয় ৩১০ বা ৩১০+ এমনকি তোমার নেই কোন পাবলিকেশন,নেই কোন থিসিস তবুও রসায়নে PhD করার জন্য প্রচুর ফান্ডিং অফার অপেক্ষা করছে
মিড (NDSU) বা লো(Lamar University)
লেভেল ইউনিভার্সিটিতে।
রসায়ন পড়ে USA এর এত বড় সুযোগ মিস করা দুঃখজনক।
....
★ রসায়নে এত বিশাল জব ফিল্ড যে,
৬ মাসের বেশী বেকার থাকা অকল্পনীয়।★
..
বিঃদঃ......বাংলাদেশে বর্তমান
১৫০ এর অধিক ঔষধ কোম্পানি আছে,
রপ্তানিতে বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড এ
সেরা, কাজেই ঔষধ কোম্পানি
কেমিস্ট ছাড়া ভাবাই যায় না,এটা
রসায়ন এর ছাত্রদের সবথেকে বড়
পাওয়া
........
রসায়ন বাংলাদেশে সবথেকে সফল সাবজেক্ট,
কাজেই কেমিস্ট হতে হলে রসায়ন পড়তে
হবেই।
.....
কর্মমুখী রসায়ন, অর্থনৈতিক রসায়ন
...
এই বিষয় দুইটি থেকে এর আগেই
তোমরা জেনেছো যে কি কি জব
তোমরা করতে পারবে,
....
এমন কোন কোম্পানি নাই যেখানে একজন
রসায়নবিদ দরকার নাই।
যেখানে কেমিক্যাল ব্যবহার হয় সেখানেই
কেমিস্ট দরকার।
...
★ রসায়নের বরেন্য ব্যক্তিত্ব :
১. Sir Alfred Nobel নিজে ছিলেন একজন রসায়নবিদ।
২. কথাসাহিত্যিক "হুমায়ূন আহমেদ "স্যার তিনিও রসায়নবিদ ছিলেন।
....
এখন তুমি নিজেই চিন্তা করে দেখো, তুমি কোন সাবজেক্ট নিবা?
এতো বিশাল জব সেক্টর তোমার হাতছাড়া করা উচিৎ হবে কিনা?