সাবজেক্ট রিভিউ
বিষয়ঃ Peace and Conflict Studies
- অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্সের সময়কাল:
অনার্সের সময়কাল ৪ বছর এবং মাস্টার্সের ১ বছর। প্রতি বছরে ২টি সেমিস্টার থাকে।
- পড়াশোনার ধরণঃ
শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন অনেকের কাছেই নতুন কিছু। অনেকে বুঝতে পারেন না যে ২টি বিপরীত বিষয় কীভাবে একসাথে আসতে পারে। আমাদের বিষয়টি মূলত সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক চিত্রে শান্তি, সংঘর্ষ ও সহিংসতা নিয়ে, যেখানে সামাজিক বিজ্ঞানের অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় যেমন সমাজবিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, সরকার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, জেন্ডার, পরিবেশ, আইন, মানবাধিকার ইত্যাদি
- দেশে চাকুরী এবং গবেষণা ক্ষেত্র:
বিভিন্ন দেশি ও আন্তর্জাতিক এনজিও, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এই বিভাগের মূল চাকরিক্ষেত্র। এটি সত্য যে এই বিভাগ সম্পৃক্ত চাকরি ও গবেষণা ক্ষেত্র বাংলাদেশে খুব একটা বড় না। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যনের চাহিদা সাম্প্রতিক সময়ে অনেক, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোতে এবং গবেষণায়।
- উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশ গমনের হার:
বিদেশে যাওয়ার হার খুব একটা বেশি না। এই বিষয় ও এই বিষয়ে সম্পৃক্ত সামাজিক বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে। এছাড়া চাকরির জন্যও বাইরে অনেক সুযোগ আছে।
- পাশ করতে সময় কত লাগে? সেশন জ্যাম কতটুকু? :
সেশন জ্যাম নেই। প্রতি বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্লাস শুরু হয়, মাস্টার্সেও। রেজাল্ট পেতে লাগে প্রায় ৩ মাস।
- পরীক্ষার ফ্রিকুয়েন্সি:
বছরে ২টি সেমিস্টার। মে-জুন ও নভেম্বর-ডিসেম্বর সময় দুইটি সেমিস্টার ফাইনাল হয়। সেমিস্টারের মাঝামাঝি সময়ে কোনো এক সপ্তাহে মিডটার্ম পরীক্ষা হয়ে থাকে।
- সপ্তাহে কয় ঘন্টা ক্লাস? কয় ঘন্টা ল্যাব? ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ কেমন? :
রুটিন অনুযায়ী সপ্তাহে ৮ ঘন্টা ক্লাস থাকে। অনার্স শেষ বর্ষে ৪ ঘন্টা। একটি সেমিনার লাইব্রেরি আছে, যেখানে এই ডিপার্টেমেন্টের পড়াশনায় সহায়ক বই, জার্নাল ইত্যাদি আছে।
- কতজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হয় প্রতি বছর? :
প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী প্রতি বছর এই বিভাগে ভর্তি হয়।
- পার্টটাইম কাজ করার মতন ফিল্ড আছে কি?:
পার্টটাইম কাজ করার সুযোগ আছে কারণ মাত্র ৮ ঘন্টা ক্লাস। তবে ক্লাস ছাড়াও পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্টসহ অন্যান্য কাজের পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরি করাটা একটু কঠিন হয়ে পড়ে।
- ক্লাব এক্টিভিটিজে সময় দিতে গেলে পড়ালেখা কতটুকু করতে পারবো? :
ক্লাব এক্টিভিটিজে সময় দিতে গেলে অবশ্যই পড়ালেখা করা যায়। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন পরীক্ষার সময় পড়ার ব্যাঘাত না ঘটে ও পড়ার সুযোগ থাকে।
এই বিষয়ে পড়ে অনুষদের অন্য কোন বিষয়ে মাস্টার্স করতে পারবো কী? :
যেসব বিভাগে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স করার সুযোগ আছে সেসব বিভাগে করা যাবে।
- ইয়ার সিস্টেম নাকি সেমিস্টার সিস্টেম? এটা ভাল নাকি মন্দ? :
এই বিভাগে সেমিস্টার সিস্টেম। ভালো মন্দ উভয়ই আছে,
ভালো দিক হচ্ছে ক্লাস পরীক্ষা সময়মত হয়, পড়াশুনাতেও রেগুলারিটি থাকে। মন্দ দিক হচ্ছে সময় কম হওয়ার জন্য অনেক সময় বিভিন্ন বিষয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা যায় না।
- নবীনদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার থাকলেঃ
শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন ২২ বছর বয়সের একটি পরিবারের মতো। ছোট ডিপার্মেন্ট, যেখানে সবাই পরিচিত মুখ। নবীন বরণ, বিভাগের, প্রতিষ্ঠা দিবস, ডিপার্টমেন্ট ট্যুর যা এই বিভাগের তিনটি সবচেয়ে উৎসবমুখর আয়োজন যেখানে সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একসাথে কাজ করে থাকে। এছাড়া ডিপার্ট্মেন্টে আন্ত ব্যাচ স্পোর্টস হয়ে থাকে। একটি ডিবেটিং ক্লাব আছে। শিক্ষকরা বেশ সহায়তা করে থাকেন। একবার খাপ খাইয়ে নিলে বিশ্ববিদ্যালয় সময়টা ভালোই যাবে। সামাজিক বিজ্ঞান নিয়ে যদি আগ্রহ থাকে বা তৈরি করতে পারো তাহলে অবশ্যই এই বিভাগ বেশ আনন্দের, কারণ সামাজিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা নিয়ে আলোচনা করা যায়, ফলে অনেক কিছু শিখতে পারবে। স্বাগতম ও অনেক শুভ কামনা তোমাদের, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগে।
ফাহিম খান, শিক্ষার্থী,
শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।