DU Genetic Engendering Subject Review

 সাবজেক্ট রিভিউ 

এপিসোড : ০৬ 

বিষয় : জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি


চলো আমরা সবাই আজকে একটু কল্পলোক থেকে ঘুরে আসি।

কোন এক অমাবস্যার রাত এ ঘুরতে বের হয়েছো কোন প্রিয়জনের সাথে। নিয়ন এর রোমান্টিক বাতিগুলো  নেই,আবার চান্দের বাতিগুলোও নেই। কিন্তু গাছ থেকে দিব্বি মিটমিট আলো জ্বলছে। 

না না!!! ভুত দেখো নি। সত্যিই গাছ থেকে আলো জ্বলছে।কল্পনা করতেই ভালো লাগছে, তাই না?

মজার ব্যাপার হচ্ছে এর জন্যে আর রুপকথার  কল্পলোকে যাওয়ার প্রয়োজন নেই এখন। 

এটা এখন বাস্তব। কিভাবে সম্ভব??? 

এই রোমাঞ্চকর ধারণাটি সম্ভব  করেছে আলাদিন এর ই এক যাদুর চেরাগ, নাম তার জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং।


এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ডি এন এ এর কাঙ্ক্ষিত অংশ (জিন) কেটে মানুষ থেকে ব্যাক্টেরিয়ায়, উদ্ভিদ থেকে প্রাণীতে, প্রাণী থেকে উদ্ভিদে স্থানান্তর করে মানবকল্যাণে  ব্যবহার করা হয়। 


চিন্তা করে দেখো, ব্যাপারটা একজন আবিষ্কারকের জন্য কতটা রোমাঞ্চকর যখন সম্পূর্ণ জীবন্ত কিছু একটা নিজের ডিজাইন মতো কাজ করছে?


এবার চলো এই বিষয় নিয়ে খুটিনাটি কিছু জিনিস জেনে নেই। 


- কোর্স সাধারণত কত বছরের হয়? 

চার বছর, আট সেমিস্টার। 


- এই সাব্জেক্ট বাংলাদেশের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন SUST, JUST,KU, JU, RU, CU,(NSU,BRAC প্রাইভেট)  এ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে এই সাবজেক্ট আছে।


- এই সাবজেক্ট এ ৪ বছরে কি কি পড়ানো  হয়??

এ বিভাগটিতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাথে সাথে পুরো ৪-৫ বছরে Fundamental of Biotechnology, Genetics, Molecular Biology, Bioinformatics, Biochemistry and Immunology এই সবগুলো বিষয়ই পড়ানো হয়। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ানো কোর্সগুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে তোমরা দেখে আসতে পারো - 

http://geb.du.ac.bd/undergraduate-program/ 


-  কি কি প্রয়োজন বিশ্বের আধুনিকতম এ বিষয়ে পড়তে?  

তোমাকে হতে হবে অদ্ভুত  আর উদ্ভট চিন্তাবিদ, কঠোর পরিশ্রমী, মানবিক গুণসম্পন্ন বিশেষ করে দেশপ্রেমিক। পাশাপাশি ঝানু হতে হবে জীববিজ্ঞান, জৈব রসায়ন এবং প্রোগ্রমিং এ। চিন্তা করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ এখানে এমন কিছু করা সম্ভব যা কেউ ভাবতেও পারে না।

যেমন, একবার এক বিজ্ঞানী ঠিক করলেন ছাগলের দুধের মধ্যে তিনি মাকড়সার জালের সূতা তৈরি করবেন যা হবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সূতা। তিনি সফল হয়েছিলেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে এবং সৃষ্টি করেছিলেন বায়োস্টীল!


- এই বিষয়ে পড়াশোনা করে ভালো করার জন্যে এসএসসি এবং এইচএসসি এর কোন বিষয়গুলোর উপর দক্ষতা প্রয়োজন?

উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় থেকেই জীববিজ্ঞান এবং রসায়ন এই দুটি বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে। যদি এই দুটি বিষয় ভালো লাগে তাহলে নিঃসন্দেহে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টিও তোমার ভালো লাগবে।


- এ বিষয়ের পড়াশোনার ধরণ কেমন? তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক নাকি উভয়ই?

তাত্ত্বিক, ব্যবহারিক উভয় ধরনের পড়াশোনাই করতে হয় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। 


- এ বিষয়ে পড়াকালীন কি কি এক্সট্রাকারিকুলার একটিভিটির সাথে যুক্ত থাকা যায়?

সাধারণত বায়োলজিক্যাল সাইন্স এবং সায়েন্স রিলেটেড অরগানাইজেশন গুলোর সাথে যুক্ত থাকলে অনেক ধরনের স্কিল ডেভেলপ হয় যা পরবর্তীতে ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।


 - এ বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির ক্ষেএগুলো কি কি?

 চাকরী থেকে এখানে গবেষণার ক্ষেত্র অনেক বেশী। চাকরীর ক্ষেত্র এ দেশে বেশী না থাকলেও বিদেশে প্রচুর, সেখানে বেতনটাও অনেক অনেক চড়া। তবে বিদেশে যাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া তো অবশ্যই যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। বাইরের বিশ্বে এ সাবজেক্টের ডিমান্ড রয়েছে বলেই সবাই যে একই সুযোগ পাবে এমনটা নয়। এ বিষয়ে পড়াশোনা করে এদেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিসিএস এর মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি গবেষণা সংস্থার গবেষক ও বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালসের গবেষক হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর মধ্যে বায়োটেক R & D, Incepta, SKF, ACI, Health Care, Nipro-JMI ইত্যাদিতে কাজের বেশ ভালো সুযোগ রয়েছে। 

 

- চাকরির ক্ষেত্রে স্যালারি রেঞ্জ কি ধরনের হয়ে থাকে? 

স্যালারির কথা বলতে গেলে বলতে হয় এ বিষয়ে চাকরির শুরুর দিককার স্যালারি সাধারণত ৩৫-৪০ হাজার হয়ে থাকে।


- রিসার্চের কি রকম সুযোগ রয়েছে?

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর পড়াশোনা অনেকটাই রিসার্চ ভিত্তিক। এক্ষেত্রে দেশে ও বাইরে রিসার্চের জন্য রয়েছে অনেক অনেক সুযোগ। দেশের মধ্যে NIB, ICDDR, BCSIR, BJRI, BORI, AEC ইত্যাদি রিসার্চ ইনস্টিটিউশনে রিসার্চ ভিত্তিক চাকরির অপশন রয়েছে। 


- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর পড়াশোনা শেষ করে বাইরের কোন দেশগুলো যাওয়ার সুযোগ রয়েছে? 

এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণার জন্য আমেরিকা, জাপান এবং  ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে গবেষণার ব্যপক সুযোগ রয়েছে।

 

 - দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য গেলে স্কলারশিপ কি ধরনের পাওয়া যায়?

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো সিজিপিএ ধারী এবং GRE,TOEFL ইত্যাদি পরীক্ষায় ভালো নম্বরধারীদের জন্য রয়েছে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপের ব্যবস্থা। প্রায় প্রতি বছরই এ ডিপার্টমেন্ট থেকে শিক্ষার্থীরা নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেই অক্সফোর্ড, হার্ভার্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ি দিয়েছেন। 

আমাদের সরকার বর্তমানে এ বিষয়ে গবেষণাতে বাজেট বরাদ্দ দিচ্ছে। দেশের গবেষণাগার গুলো উন্নত হচ্ছে দিনদিন। শিক্ষার্থীদের আগ্রহও গগনচুম্বী।


তাহলে বলো, ভবিষ্যতের মাকসুদুল আলম হতে প্রস্তুত তো তোমরা?


- তথ্য সহায়তায় 

তাইয়্যেবা তাসনিম দীপ্তি

৪২তম ব্যাচ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। 


- লিখেছেন 

সানজিদা শিলা

কনটেন্ট রাইটার, ক্যারিয়ারোলোজি। 


#subject #review #subject_review #genetics #genetic #engineer #genetic_engineering #career #admission  #careerology




Muinuddin Gaus

Mohammad Muinuddin Gaus, a dedicated student of the Islamic Studies department at the University of Dhaka, shares valuable information on various online platforms. To learn more about him, follow his social media links.

Post a Comment

Previous Post Next Post